Monday 6 October 2014

বসন্ত এসে গেছে

একরাশ বিপদের মাঝখানে শুয়ে আছি
কানাঘুষো শোনা যায় বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
কবিদের মৃতদেহ চাপা পড়ে কাগজে
বসন্ত এসে গেছে
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি
আমলকী বনে শোনো...
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে

দূর হোক বানানের অকারণ চিন্তা
হ্রস্ব ই দীর্ঘ ঈ হ্রস্ব উ দীর্ঘ ঊ
ফাঁকা হোক ফুটপাথ হাঁটবো আরামে
কোকিলের ডাকে গুটি ফেলবো ক্যারম-এ
কেউ কানে কানে বলে ফেলো শোনা গেছে খবরে
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
পূর্ণিমা রাতে ওই ছোটাছুটি করে কারা
টুঁটি টিপে ধরে প্রেম বসন্ত এসে গেছে
রঙ লাগে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে
ডালপালা মুকুলের সন্ধানে
বসন্ত এসে গেছে
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি
আমলকী বনে শোনো...
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে...
বসন্ত এসে গেছে

এই বসন্তে কয়েক বছর আগে
তোমায় প্রথম দেখেছিলাম আমি
হেঁটেছিলাম ভোরটা মাঠের পথে
সেই বসন্ত এখন ভীষণ দামী
আমার কাছে তোমার কাছে আমার কাছে
বসন্ত এসে গেছে
তার ছেঁড়া যন্ত্রের মাঝখানে শুয়ে আছি
আমলকী বনে শোনো...
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে...
[অন্তরালে কোরাস এই স্তবকটির সাথে সাথে চলবে]
[একরাশ বিপদের মাঝখানে শুয়ে আছি
কানাঘুষো শোনা যায় বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
কবিদের মৃতদেহ চাপা পড়ে কাগজে ]
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে
বসন্ত এসে গেছে

বোবা টানেল

গান : বোবা টানেল
ছবি : চতুষ্কোণ (২০১৪)
গায়ক : অনুপম রায়
সঙ্গীত আয়োজক : অনুপম রায়
কথা : অনুপম রায়
কন্ঠ : শুধু পুরুষ

ফিরে গেছে কত
বোবা টানেলের গলা চিরে আলো
ইচ্ছেরা ছুটে চলে
সারাটা দিন জুড়ে
তুমি আনাগোনা করেছো সেই সুরে
তার রঙ লেগে আছে
অবুঝের পেনসিল
ফিরে গেছে কত
বোবা টানেলের গলা চিরে আলো
ইচ্ছেরা ছুটে চলে
সারাটা দিন জুড়ে
তুমি আনাগোনা করেছো সেই সুরে
তার রঙ লেগে আছে
অবুঝের পেনসিল
ভালোবাসা বাকি আছে
তোমারও আমার কাছে
যা চেয়েছো দিতে আমি পারিনা
আমারো সময় ডালে
ফুরিয়ে এসেছে পাতা
এত প্রেম কাছে এসে এলোনা
যদি কোনোদিন তুমি
দু হাত দিয়ে ঝিনুক কোড়াও
নেই আমি সেই অল্প ভাঙা গল্পগুলোয়
কার সাথে বলো শব্দ ছুঁড়ে ফিরবো বাড়ী
মাঝরাতে
আমি তোমার কথা বলবো কাকে ?

হেঁটে গেছি আমি
আয়ুরেখা ধরে সাড়া দিতে এত
দেরী হয়ে গেলো বলে
জন্ম মৃত্যু ভেঙে
ভোরবেলা তুমি আলো হয়ে ফোটো
আমি জেগে আছি এসো
প্রতি চুম্বনে স্থির
কখনও নাগরদোলা
ওলটে পালটে সবই
আমাদের ছিঁড়ে খেলো জোনাকি
আমারো সময় ডালে
ফুরিয়ে এসেছে পাতা
এত প্রেম কাছে এসে এলোনা
যদি কোনোদিন তুমি
দু হাত দিয়ে ঝিনুক কোড়াও
নেই আমি সেই অল্প ভাঙা গল্পগুলোয়
কার সাথে বলো শব্দ ছুঁড়ে ফিরবো বাড়ী
মাঝরাতে
আমি তোমার কথা বলবো কাকে ?

যদি কোনোদিন তুমি
দু হাত দিয়ে ঝিনুক কোড়াও
নেই আমি সেই অল্প ভাঙা গল্পগুলোয়
কার সাথে বলো শব্দ ছুঁড়ে ফিরবো বাড়ী
মাঝরাতে
আমি তোমার কথা বলবো কাকে ?

Friday 27 June 2014

MAACH MISHTI & MORE

সকালের আলো মেখে চার চাকা পায়ে,
কবে দূর যাবে আবার
বৃষ্টিতে ভেজা চোখে রেলিং তাকায়,
খুঁজে সুর পাবে আবার
সেই হারানো চড়ুইয়ের ডাক,
বলে যে গেছে সেই চলে যাক
নিজেকে ভালবাসো তুমি এবার।
সকালের আলো মেখে চার চাকা পায়ে,
কবে দূর যাবে আবার
বৃষ্টিতে ভেজা চোখে রেলিং তাকায়,
খুঁজে সুর পাবে আবার
সেই শিশি বোতল-ওয়ালার ডাক,
বলে যে গেছে সেই চলে যাক
নিজেকে ভালবাসো তুমি এবার।

কবরের খবর তো নয়,
জ্যান্ত জীবনী
ট্রাফিকের শেষ খোলাপ শোনায়।
হেঁটে গেছো বহুবার,
কিন্তু দেখনি
কিভাবে রোজ সন্ধ্যে ঘনায়।
সেই হাত ছেড়ে সাইকেলের ডাক,
বলে যে গেছে সেই চলে যাক
নিজেকে ভালবাসো তুমি এবার।

সারাদিন ছুটে মরা,
মিনি-বাসটায়,
কাঁধে মুখ রেখো আবার।
বেঁচে থাকা দিয়ে মাখা,
দই-ফুচকায়,
চেখে সুখ দেখো আবার।
সেই হারানো চড়ুইয়ের ডাক,
বলে যে গেছে সেই চলে যাক
নিজেকে ভালবাসো তুমি এবার।

Thursday 15 May 2014

Apur payer chap

শাপলা ফুলের পোকা, ভেজা শালিকের ডানা
ঘাসজমি থমথমে, ধূসর সামিয়ানা
পাশ দিয়ে পথ গেছে দূরের থেকেও দূরে
অপুর পায়ের ছাপ ডুবছে বাঁশির সুরে

এখনও আলগা মনে কাশফুল সারি সারি
বাস্তুসাপের মত সময়ের রেলগাড়ি

এখনও ছাদের ঘরে আলতা পায়ের ছাপে
চিত্রনাট্য জেন সাজানো সিঁড়ির ধাপে

নাছোড়বান্দা স্মৃতি সাদা আর কালো জুড়ে
অপুর পায়ের ছাপ ডুবছে বাঁশির সুরে...

Friday 4 April 2014

DAS KEBIN- ANJAN DUTTA

সোমবারে আসে স্বর্ণালী আর সুমন্ত
মঙ্গলে মিতা আর মন্টু
বুধবারে আসে বৈশাখী আর বিপ্লব
বৃহস্পতিবারে শেলী আর সন্তু
শুক্কুরবারে আসে সীমা আর শান্তনু
শনিবারে সুধা-সুধন্য
রবিবার বিকেলটা সবাই জানে কার
রবিবার আমাদের জন্য
ফিরে ফিরে সাতদিন দাসবাবুর এ কেবিন
কত প্রেমালাপে যায় ভরে
জায়গা নেই যে কোন আমাদের অন্য
তিনশ বছরের শহরে, এই তিনশ বছরের শহরে
হাট-মাঠ সিনেমার হলটা
নেই যে কোন গলি-দলটা
একটু আপন করে বলবো কোথায় বল
মনের গোপন এই কথাটা
ময়দানে মীটিঙ্গে শোরগোল
গঙ্গার ঘাটে ভিখিরির দল
তাই ঘুরেফিরে দাসবাবুর এই কেবিনটা
রয়ে গেছে সবচেয়ে সস্তা
এক কাপ চায়ে কেটে যায় আধঘণ্টা
দুই কাঁপে পৌনে তিন
ফিশ-চপ নিলে পাক্কা চার ঘন্টা
ডিশকো-বিরাজী নিলে প্রায় সারাদিন
এইভাবে কেটে যায় কত কত সপ্তাহ
বয়স শুধুই যায় বেড়ে
ভবিষ্যৎটা সেই যেমনটি ছিল
রয়ে যায় নড়বরে
তবু ঘুরে সাতদিন দাসবাবুর এ কেবিন
কত প্রেমালাপে যায় ভরে
জায়গা নেই যে কোন আমাদের অন্য
তিনশ বছরের শহরে, এই তিনশ বছরের শহরে

মাঝে মাঝে মনে হয় ধুচ্ছাই
এইবার আমি ঠিক পালাবোই
তবু রবিবার এলে সেই ঘুরেফিরে
দাসবাবুর কেবিনটাতে চলে যাই
সেই টেবলে আঁকিবুঁকি কাটা
কাগজের ন্যাপকিনে কবিতাটা
পর্দাটা টেনে দিয়ে পৃথিবীর সব ঝঞ্ঝাট
আমি ভুলে যাই
তিনমাস হয়ে গেল, রঞ্জন রঞ্জনা
আসেনাতো আর ফিরে ফিরে
তার বদলে স্বার্ণালী আর সুমনতো
ফিরে ফিরে আসে সোমবারে
এখন সুরঞ্জনা শ্যামলের হাত ছেড়ে
শমিকের হাত ধরেছে
বিপ্লবদেরও নাকি শুনছি ইদানিং
কথাকাটি বাড়ছে, বাড়ছে
আমাদেরও ফিউচার খুবই অপরিষ্কার
ভরসা পাচ্ছিনা কোন
হাঁড়িমুখ করে বসে থাকে নীলা আজকাল
চাকরিটা পায়নি এখনো, চাকরিটা পায়নি এখনো

SHAMSON- ANJAN DUTTA

জ্বলছে নিভছে নিয়নের বিজ্ঞাপন
বৃষ্টিতে ভিজে গেছে রাস্তা
ভেজা ভেজা মন
লাস্ট ট্রাম ধরে ঘরে ফিরবে আবার স্যামসন
সাথে নিয়ে সঙ্গী শুধুই স্যাক্সফোন
পাঁচতারা হোটেলের বাজনাওয়ালা ফেরে ঘর
এঁদোগলি সিঁড়ি ভেঙে স্যাঁতস্যাঁতে ছাদের ওপর
সস্তা মদে গেছে বিছানাটা ভিজে
ধুয়েমুছে গেছে যৌবন
স্যামসন আর তার সঙ্গী স্যাক্সফোন
এইভাবে খুন হয়ে যায় কতকত স্যামসন
হোটেলের কোণে খুন হয় কতকত স্যামসন
গোগ্রাসে গিলে চলে শহরটা দেয় নাকো কান
এইভাবে খুন হয়ে যায় কত জীবনের গান
দি লায়লা এসেছিল জীবনে একবার
দুদিনের প্রেম গ্যাছে দুদিনেই ভেঙে চুরমার
বেছে নিয়ে চলে গ্যাছে অন্য আরেকজন
ফেলে রেখে স্যামসন আর তার স্যাক্সফোন
ক্রুশবিদ্ধ যিশু ক্যালেন্ডার থেকে কাঁদে
তারই মত স্যামসন আটকে পড়েছে এক ফাঁদে
সস্তাহীন বিসুর বাজিয়েই যেতে হবে এইভাবে যাবৎজীবন
হোটেলের কোণে আলো আধারি নির্বাসন
এইভাবে খুন হয়ে যায় কতকত স্যামসন
হোটেলের কোণে খুন হয় কতকত স্যামসন
গোগ্রাসে গিলে চলে শহরটা দেয় নাকো কান
এইভাবে খুন হয়ে যায় কত জীবনের গান

আসবেনা দি লায়লা কোনোদিন বাঁচাতে তাকে
এইভাবে পচেগলে পাঁচতারা নরকে
নিঃশেষ হয়ে যাবে একদিন দুজন
স্যামসন আর তার সঙ্গী স্যাক্সফোন
ফুসফুসে লুকোনো আছে কতকত গান
জানবেনা কেউ সেই স্যাক্সফোনের অভিমান
শুধু মাঝরাতের আকাশে চাঁদটা ঘুম ভেঙে উঠে
শুনবে স্যামসনের সেই স্যাক্সফোন
এইভাবে খুন হয়ে যায় কতকত স্যামসন
হোটেলের কোণে খুন হয় কতকত স্যামসন
গোগ্রাসে গিলে চলে শহরটা দেয় নাকো কান
এইভাবে খুন হয়ে যায় কত জীবনের গান

DUTO MANUSH-ANJAN DUTTA

দু’টো মানুষ
একসাথে কত পথ চলা
হাতে হাত রেখে কথা বলা
কেন সব করে অবহেলা
কেন শেষমেষে এসে বিদায়
ফুলদানি
আছড়ে ভেঙ্গে চুড়মার
ফুল জল সব একাকার
নেমে আসে অন্ধকার
জানলার বাইরে নেমে আসে রাত

দু’টো বালিশ
কত স্বপ্ন ভালোবাসা বোঝাই
দেখে যায় এই কুৎসিত লড়াই
আশা আকাঙ্ক্ষা সব পুড়ে ছাই
কেউ মুখ ফুটে কিছু বলে না

টেবিল ল্যাম্পের আধো অন্ধকারে
ভাঙ্গাচোড়া মন দুটো গুমড়ে গুমড়ে মরে
দুজনেই বসে থাকে হাত ধরবে বলে
কেউ মুখ ফুটে কিছুই বলে না
ভগবান তাই নেমে আসে না

আসে সকাল
চোখ মুছে চিঠি লেখা
সুটকেস হাতে ট্যাক্সি ডাকা
ফিরে না তাকিয়ে দেখা
ইশ…এইভাবে কেউ চলে যায়
এইভাবে কেউ চলে যায়